ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি সভাপতি এটি এম এমদাদুল আলম কে লাঞ্চিত করার ঘটনা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত এবং সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়।
এসময় লিখিত বক্তব্যে ছাত্রলীগ সম্পাদক জয় বলেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ মঙ্গলবার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটি এম এমদাদুল আলম তার বক্তব্যে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নাম জড়িয়ে যে মিথ্যাচার করেছে তা মানহানিকর। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশকে ঘোলাটে করা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ভ্যানগার্ড ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করার জন্যই তিনি এমন বক্তব্য প্রদান করেছে বলে আমরা মনে করি। তার এহেন বক্তব্যের প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপি – জামায়াত তাদের এজেন্ডাকে বাস্তবায়ন করতে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার উদ্দেশ্যে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তাদের এই উদ্দেশ্যকে কোনোদিন বাস্তবে রূপ দিতে দিবে না বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
গতকালের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জয় বলেন, গতকালের ঘটনাটা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত। কর্মকর্তাদের দাবির সাথে আমাদের কোন দ্বিমত বা বৈরিতা নেই। কয়েকজন শিক্ষার্থী কাজের জন্য গেলে তাদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হচ্ছিল। আমি হট্টগোল শুনে সেখানে যাই এবং ওই শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিয়ে আসি। আমি সেখানে ৩০ সেকেন্ডের বেশী অবস্থান করিনি।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি যৌক্তিক মনে করে তাহলে তারা কর্মকর্তার সমিতির দাবি মেনে নিতে পারে সে বিষয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। কর্মকর্তা সমিতি কীভাবে তাদের দাবি আদায় করবে সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার কিন্তু কর্মবিরতি পালন করে বা শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে কোন দাবি আদায়কে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগ যৌক্তিক মনে করে না।
কর্মকর্তাদের ১৬ দফা দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সবসময় চেয়ে এসেছি যে বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব গতিতে চলুক। এই যে এখন অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেম চালু হচ্ছে, এর পিছনেও আমাদের ছাত্রলীগের অবদান রয়েছে। আমাদের ৩৩ দফার গুরুত্বপূর্ণ দফা ছিলো এই অনলাইন লেনদেন চালু করা।কর্মকর্তাদের দাবীর সাথে আমাদের দ্বিমত নেই। তারা অবশ্যই তাদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে উপস্থাপন করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮০০০ শিক্ষার্থীর মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা ছাত্রলীগ পরিবার কাজ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সাথে কখনো আমাদের বৈরী সম্পর্ক ছিলো না, ভবিষ্যতে হবেও না। কর্মকর্তাদের লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির জন্য শিক্ষার্থীদের ক্লাস কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। এখন সপ্তাহে চারদিন সশরীরে ক্লাস হচ্ছে সেখানে যদি তারা নিজেদের দাবি আদায়ে কর্মবিরতি দিয়ে আন্দোলন করে তাহলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা ব্যহত হবে। শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ, ক্লাসরুম, বইপত্র, টেবিল চেয়ার, ওয়াইফাই সহ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ আমাদের চাওয়া।
ছাত্রলীগের সভাপতি আরো বলেন, তারা (কর্মকর্তারা) ন্যায্য দাবী করলে আমরা অবশ্যই তাদের দাবি আদায়ের বিপক্ষে না। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম যেন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত সুন্দর ও সঠিকভাবে চলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান থাকবে তারা যেন শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে নিজ স্বার্থের উপরে রেখে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করে।