জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ত: বিভাগীয় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানা যায়। আজ ১৭ নভেম্বর ইংরেজি বিভাগ ও গণিত বিভাগের মধ্যকার খেলা শেষে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী হতে জানা যায়, ইংরেজি বিভাগ ও গণিত বিভাগের ফুটবল ম্যাচে ইংরেজি বিভাগ জিতে যাওয়ার পর তাদেরকে লক্ষ্য হামলা করে গণিত বিভাগের কতিপয় ছাত্র। পরে ২ পক্ষের সংঘর্ষে প্রায় ১০ জন আহত হয়। খেলার মাঠে বিষয়টি মিটমাট হলেও বাসে আসার সময় গণিত বিভাগের কতিপয় ছাত্র লাঠি ও রড নিয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিতে হামলা করে ইবরাহিম, শিপন, কলিম সহ ৬ জনকে আহত ও রক্তাক্ত করে ও বাস ভাঙচুর করে। বাসে হামলাকারীদের অধিকাংশই ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে প্রমাণ মিলেছে।
হামলাকারীদের মধ্যে অন্যতম হলো গণিত বিভাগের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈকত, ছাত্রদলের কর্মী ১৪ ব্যাচের এনামুল হক ইহাদ, ফয়সাল ও ১৬ ব্যাচের এ এইচ হৃদয়।
এ ব্যাপারে ইংরেজি বিভাগের মো ইবরাহিম বলেন, টাইব্রেকারে গোল দিয়ে জয় লাভের আনন্দে আমার টিমমেট নিয়ে মাঠের একপাশে গিয়ে আনন্দ উল্লাস করি। পরে ১৭ ব্যাচের জুনিয়র ছোট ভাই এসে বলে, ভাই আমাদের ১৩ ব্যাচের সোহেল কে ওরা ৫/৬ জন মারছে। পরে সেখানে গিয়ে সেটাতে বাঁধা দেয়। পরে গণিত বিভাগের ১৬ ব্যাচের ফয়সাল আমাকে পিঠের পিছনে বুট দিয়ে লাথি মেরে রক্তাক্ত করে।
আরেক ভুক্তভোগী ইংরেজি বিভাগের জান্নাতুন নূর অমি বলেন, খেলার মাঠে স্লেজিং হাতাহাতির ঘটনা মাঠে মিটমাট হওয়ার পরও গণিত ডিপার্টমেন্টের ছেলেরা যেভাবে বাসে ভাঙচুর ও হামলা করেছে এতে আমরা সকলেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বাসে শিক্ষক এবং নারী শিক্ষার্থী থাকা সত্ত্বেও তারা উগ্রতা প্রদর্শন করেছে,মেয়ে শিক্ষার্থীদের কে সহ বাসে অনেক সময় ধরে বদ্ধ অবস্থায় আটকে রাখায় অনেকে অসুস্থ হয়ে পরেছিলো। এমনকি তাদের দ্বারা মেয়ে ছেলে সব শিক্ষার্থীদের কে বুলিং এর শিকার হতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ নষ্ট করা এবং নারী শিক্ষার্থী সহ শিক্ষক ও অন্য শিক্ষার্থীদের কে হ্যারাসমেন্ট করার কারণে আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
ইংরেজি বিভাগের উম্মে হাবিবা বলেন, গণিত বিভাগের ফয়সাল আর হৃদয় লাঠি নিয়ে বাসে হামলা করে, মারামারি করে খেলায় হারার পর। আমাদের বিভাগের কলিম ও ইব্রাহিম ভাইকে অনেক মারধর করেছে। মেয়েদের হেনস্তা করেছে। আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
এদিকে গণিত বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী এনামুল হক ইহাদ বলেন, ‘টাইব্রেকার শেষে ইংরেজি বিভাগের গোলকিপার আমাদের দর্শকদের দিকে বালু দেয়। আমরা যখন প্রতিবাদ করতে আসলাম তখন তারা সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের উপর হামলা করেন। তারা পতাকার পাইপ দিয়ে আমাদের মারতে আসে। ক্যাম্পাসের বাসে আসার সময় আমাদের বাসের দিকে বাঁশ দিয়ে জানালায় খোঁচা মারে আমাদের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্য করে। তখন আমাদের জুনিয়ররা একটু রেগে যায়। আমরা কালকে প্রতিবাদ লিপি প্রক্টর অফিসে দিবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. তাজাম্মুল হক বলেন, ‘আমাদের কাছে দুই বিভাগের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ আসে নি। আমরা অভিযোগের অপেক্ষায় বসে আছি।
শাকিল/সাএ