ক্রিকেট বিশ্বের বড় বড় সব তারকাদের দেখা মেলে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল)। চার-ছক্কা আর অর্থের ঝন-ঝনানি সবমিলিয়ে মাস দুয়েক ক্রিকেট ভক্তদের বুদ করে রাখে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ। এমন রোমাঞ্চকর আয়োজনের পেছনে বড় একটা ভূমিকা আছে অর্থের। বিশ্বের অন্য সব লিগের সঙ্গে এই জায়গাটায় বড় একটা পার্থক্যও আছে এই লিগের।
আইপিএলের মূল্য আসলে কতো? হিসেব করতে গেলে আপনার মাথা ঘুরে যেতে বাধ্য। আইপিএলের মাধ্যমে যে শুধুমাত্র ভারতের ক্রিকেটই লাভবান হচ্ছে, তা কিন্তু নয়। ভারত সরকারও এই আসর থেকে কামিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতীয় সরকারের মোট আয়ের অন্তত প্রায় ০.৮ শতাংশের জোগান আসে আইপিএল থেকে। শতাংশের হিসেবে এই অংক সামান্য হলেও, প্রায় ১৪০ কোটি মানুষের দেশের কথা মাথায় রাখলে এটা বোঝা কষ্টকর নয় যে, এই ছোট অংকটাই কী বিশাল হতে পারে।
চলতি আসরসহ মোট পাঁচ মৌসুমের জন্য ৪৮ হাজার ৩৯০ কোটি রুপিতে সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করেছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। ডিসনি স্টার, ভায়াকম ১৮ ও টাইমস ইন্টারনেট কিনেছে ভারতের টি-টোয়েন্টি লিগের চার ক্যাটাগরির স্বত্ব।
আগামী ২০২৭ সাল পর্যন্ত উপমহাদেশের জন্য টেলিভিশন সম্প্রচার স্বত্ব আছে ডিসনি স্টারের কাছে। ২৩ হাজার ৫৭৫ কোটি রুপিতে এ স্বত্ব কিনেছে তারা। তবে টেলিভিশন স্বত্বের চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে ডিজিটাল স্বত্ব। ২৩ হাজার ৭৫৮ রুপিতে সে স্বত্ব কিনেছে ভায়াকম ১৮। উপমহাদেশে ডিজিটাল স্বত্বের সঙ্গে তাদের কাছে থাকবে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার টেলিভিশন ও ডিজিটাল স্বত্ব। মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ৪১৩ কোটি রুপিতে স্বত্ব কিনেছে টাইমস ইন্টারনেট।
উপমহাদেশের সম্প্রচার স্বত্বের জন্য স্টার প্রতি ম্যাচে আইপিএলকে দেবে প্রায় ৫৭ কোটি ৫০ লাখ রুপি। ডিজিটাল স্বত্বের জন্য ভায়াকম ১৮ খরচ করেছে মোট ২০ হাজার ৫০০ কোটি রুপি। প্যাকেজ ‘সি’-এর (গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের বাড়তি সংযোজন) জন্য আরও ২ হাজার ৯৯১ কোটি রুপি আইপিএলকে দেবে তারা। ফলে প্রতি ম্যাচে প্রায় ৫৮ কোটি রুপি তাদের কাছ থেকে পাবে আইপিএল।
সবমিলিয়ে এবারের পাঁচ আসরে এখান থেকে ৪৮ আহজার ৩৯০ কোটি টাকা আয় করবে আইপিএল কতৃপক্ষ। আর এই সময়ে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ৪১০টি। তাই প্রত্যেক আসরে আয়ের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৯ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা।
আর যদি ম্যাচ প্রতি আয়ের হিসেব করা হয় তাহলে টাকার অঙ্কটা কমে দাঁড়ায় ১১০ কোটিতে। যেখানে টিভি থেকে ৫৭ কোটি ৪০ লাখ, ডিজিটাল থেকে ৫০ব কোটি আর ওভারসিজ থেকে ২ কোটি ৬০ লাখ রুপি আয় হবে।
টাকার এই অঙ্কটা যদি আপনি আরও ছোট করতে চান, তাহলে প্রতি বলে কত টাকা আয় করে বিসিসিআই সেই হিসেবটা দেখতে পারেন। এক ম্যাচে সর্বোচ্চ বৈধ্য ডেলিভারীর হওয়ার সম্ভাবনা আছে ২৪০ টি (২০*৬)। বলের সর্বোচ্চ সংখ্যা ধরলেও বলপ্রতি আয়ের পরিমাণ দাড়ায় ৪৫ লাখ ৮৩ হাজার ৩৩৩রুপি।